ত্রিপুরার জিএসডিপি (গ্রস স্টেট ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) বৃদ্ধির হার জাতীয় গড়ের চেয়েও বেশী। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রাজ্যের জিএসডিপি বৃদ্ধির হার ৮.৮০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালে এই হার বৃদ্ধি পেয়ে ৮.৯৫ শতাংশ গিয়ে দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজ দুপুরে রাজ্য বিধানসভার প্রেস কর্ণারে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ। সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আরও জানান, উন্নয়নমূলক কাজকর্ম থেকে শুরু করে কোন কিছুতেই যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেই লক্ষ্যে গত ২৪ মার্চ রাজ্য বিধানসভায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রথম চার মাসের জন্য ১০৬৬৫৬ কোটি টাকার ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর পূর্ণাঙ্গ বাজেট তৈরী করার মত হাতে বেশী সময় না থাকায় ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করতে হয়েছে। ভোট অন অ্যাকাউন্ট তৈরী করতে গিয়ে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে কোন ক্ষেত্রেই আর্থিক সমস্যা যাতে না হয় সেদিকে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ভোট অন অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ২৪ মার্চ রাজ্য বিধানসভায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য ৩০৬৫.৩৭ কোটি টাকার অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দের দাবী পেশ করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০২২-২৩ সালে রাজ্যের নিজস্ব কর রাজস্ব ১৪.৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই খাতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৩০০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় জানান, ২০২১-২২ অর্থ বছরে সড়ক খাতে মূলধনী বায় ছিল ৪৪৩.০০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ সালে এই পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ৬৪৭.০০ কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থ বছরের তুলানায় এই ক্ষেত্রে বায় ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি জানান, চলতি আর্থিক বছরে (২০২২-২৩) সুবর্ণজয়ন্তী ত্রিপুরা নির্মাণ যোজনায় ১৬৯টি প্রজেক্টের জন্য ৫৯৬ কোটি টাকা এবং স্পেশাল এসিস্টেন্ট ক্যাপিটেল-র আওতায় ১১৫টি প্রজেক্টের জন্য ৬৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। সব কয়টি প্রজেক্টের রূপায়ণের কাজই এখন এগিয়ে চলেছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী জানান, ভিশন ডকুমেন্টে দেয়া অধিকাংশ প্রতিশ্রুতিই রাজ্য সরকার পূরণ করেছে। উদাহরণ হিসেবে সামাজিক ভাতা ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০০ টাকা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বেতনক্রম অনুযায়ী পে কমিশন রূপায়ণ করা হয়েছে। এর অতিরিক্ত হিসাবে রাজ্য সরকার আজ পর্যন্ত ২০ শতাংশ ডিএ মঞ্জুর করেছে। এছাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আশাকর্মী / এমডিএম ওয়ার্কার, ডিআরডব্লিউ/ পিটিডব্লিউ ইত্যাদি অংশের কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী জানান, মূলধন এবং আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন দেশের আর্থিক সাহায্য নির্ভর ৭টি প্রজেক্ট অনুমোদন করেছে এবং এগুলি এখন রূপায়ণের কাজ চলছে। ৮১৭৪ কোটি টাকার এই ৭টি প্রজেক্ট ছাড়াও ৩০২৫ কোটি টাকার আরও ৭টি প্রজেক্ট পাইপলাইনে রয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার অনলাইনে বেতনের বিল করার পদ্ধতি চালু করেছে। রাজ্য সরকারের কর্মচারিদের বেতনের ক্ষেত্রে কোন কাগজের বিল পেশ করা হচ্ছেনা। সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থ দপ্তরের সচিব ব্রীজেশ পান্ডে এবং অর্থ দপ্তরের যুগ্ম সচিব আকিঞ্চণ সরকারও উপস্থিত ছিলেন।