‘
১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ দেশের তিন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যু হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ফাঁসিতে ঝোলায় তাঁদের। হাসিমুখে লাহৌর জেলে দেশের জন্য ফাঁসির দড়ি গলায় পরেন সকলে। সেই থেকেই ২৩ মার্চ তিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়।২ ৩ মার্চ দিনটি আজও ভগৎ সিংহ, সুখদেব এবং রাজগুরুর আত্মবলিদানের জন্য স্মরণীয়। দেশের জন্য স্বার্থত্যাগের প্রতীক। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারানো জওয়ান, আম নাগরিকের আত্মবলিদান স্মরণ করা হয় এই দিনে। বিপ্লব মানুষের জন্মগত অধিকার বলেই মত ছিল বগৎ সিংহের।হি ন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন ভগৎ সিংহ, সুখদেব এবং রাজগুরু।ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী ছিলেন তাঁরা, যা তাঁরা চলে যাওয়ার পরও উদ্বুদ্ধ করে বিপ্লবীদের।
১৯২৮ সালের ৩০ অক্টোবর স্যর জন সাইমনের লাহৌর সফরের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চাসলান লালা লাজপত রাই। ‘সাইমন গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। প্রতিবাদ থামাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। তাতে গুরুতর আহত হন লাল লাজপত রাই। লালা লাজপত রাইয়ের মৃত্যুর পর ভগৎ সিংহ, সুখদেব এবং রাজগুরু জেমস স্কটকে হত্যার ছক কষেন। কিন্তু চিনতে ভুল করে জেপি সন্ডার্সকে হত্যা করে বসেন তাঁরা। লালা লাজপতের রাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে সেন্টার লেজিস্টেটিভলি অ্যাসেম্বলিতে বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনা করেন ভগৎ সিংহ, সুখদেব, রাজগুরুরা। ১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল বোমা নিয়ে ঢুকে ধরা পড়ে যান তাঁরা। তাতে ফাঁসির সাজা হয় তাঁদের। ভগৎ সিংহের যখন ২৩ বছর বয়স, সুখদেবের ২৪ এবং রাজগুরুর ২২, ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ তাঁদের ফাঁসি কার্যকর হয়।
শহিদ দিবস পালনের জন্য বাঁধাধরা কোনও নিয়ম নেই। কুচকাওয়াজ থেকে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমেও পালন করা যেতে পারে শহিদ দিবস।তবে এই দিনে দেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী, দেশের জন্য প্রাণ বলিদান দেওয়া ভারত মায়ের দামাল ছেলেদের স্মরণ করতে দু’মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শহিদ দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের প্রশাসনিক এবং সাংবিধানিক প্রধানরা বিশেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন শহিদদের উদ্দেশে। স্কুল-কলেজে অনুষ্ঠান হয়। স্বাধীনতার মূল্য, আত্মবলিদান যাতে না ভুলি আমরা কখনও, তার জন্যই বিশেষ আয়োজন। তবে শুধু ২৩ মার্চই নয়, ৩০ জানুয়ারি দিনটিও শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয় ভারতে। কারণ ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারিই নাথুরাম গডসের ছোড়া গুলিতে মারা যান মহাত্মা গান্ধী।