ইসরোর বিজ্ঞানীদের হাজার চেষ্টার পরও ঘুম থেকে জাগানো যায়নি চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানকে। তবে বিক্রম ও প্রজ্ঞান স্লিপ মোডে যাওয়ার আগেই তাদের নির্দিষ্ট কাজ সেরে ফেলেছিল। প্রত্যাশার থেকে বরং বেশি কাজ করেছে তারা। তবে যদি আরও একবার বিক্রম ও প্রজ্ঞানের সাড়া পাওয়া যেত তবে তা হত ইসরোর জন্য বাড়তি পাওনা।গত ৩ সেপ্টেম্বর সোশ্য়াল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে ঘোষণা করে চাঁদের মাটি থেকে লাফিয়ে উঠে দ্বিতীয়বারের জন্য সফল ভাবে সফট ল্যান্ডিং বা অবতরণ করেছে বিক্রম।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, সফল ভাবে হপ এক্সপেরিমেন্ট সম্পন্ন করে বিক্রম। এই সাফল্যের সুদূরপ্রসারি তাৎপর্য রয়েছে তার আভাস দিয়েছিল ইসরো।এই হপ এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে বড় তথ্য সামনে আনলেন চন্দ্রযান-৩-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর পি ভিরামুথুভেল। তিনি জানিয়েছেন, ল্য়ান্ডারের হপ এক্সপেরিমেন্টটি সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত ছিল। মিশনের উদ্দেশ্য়ের চেয়েও বেশি কাজ করেছে ল্যান্ডারটি।এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে কথা বলার সময়ে ভিরামুথুভেল জানান, পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিন অর্থাৎ এক চন্দ্রদিন গবেষণা চালানোর সময় বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভার প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেছে।
হপ এক্সপেরিমেন্টের সময় চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের সঙ্গে থাকা ইঞ্জিনকে চালু করা হয়। এরপর ওই ল্যান্ডারকে প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় ওড়ানো হয়। লাফ দিয়ে আগের জায়গা থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার দূরে সফল ভাবে অবতরণ করে ল্যান্ডার বিক্রম। এই পরীক্ষার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে ইসরো ব্যাখ্যা করে ভবিষ্যতে নমুনা ফেরত ও মানব মিশনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ভবিষ্যতে মহাকাশচারীদের পৃথিবীকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য এই পরীক্ষাটি গুরুত্বপূর্ণ।
সফট ল্যান্ডিং ও মহাকাশযানকে একাধিকবার উৎক্ষেপণ করার ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য অপরিহার্য এই পরীক্ষা।২৩ অগাস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে চন্দ্রযান-৩। প্রযুক্তির মাধ্যমে চাঁদের বুকে সালফার, অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালসিয়াম-সহ একাধিক যৌগের হদিশ পান ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা। বিক্রম ও প্রজ্ঞান ঘুমিয়ে থাকলেও সক্রিয় রয়েছে চন্দ্রযান-৩-এর প্রোপালশন মডিউল। ক্রমাগত নিজের কাজ করে যাচ্ছে চন্দ্রযান-৩-এর প্রোপালশন মডিউল।
একটি বৈজ্ঞানিক পেলোড রয়েছে প্রোপালশন মডিউলের ভিতর। এটি ৫২ দিন ধরে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে।চাঁদের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীকে নিরীক্ষণ করার জন্য স্পেকট্রো পোলারিমেট্রি অফ হ্য়াবিটেবল প্ল্যানেট অফ যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে আগামী ছয় মাসের জন্য এই মডিউলটি কাজ করবে।
Tags:
News