আগামী ৩-৪ এপ্রিল আগরতলায় অনুষ্ঠিতবা জি-২০ বিজ্ঞান সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহার সভাপতিত্বে আজ সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মুখ্যমন্ত্রী আসন্ন জি-২০ বিজ্ঞান সম্মেলনকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে যে সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তা পর্যালোচনা করেন। জি-২০ বিজ্ঞান সম্মেলনকে সার্বিক দিক দিয়ে সফল করে রাজ্যের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে আরও আন্তরিকতার সঙ্গে ও সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানান। যে সমস্ত স্থানগুলি জি-২০ দেশের প্রতিনিধিগণ পরিদর্শন করবেন সেগুলিকে সুন্দর ও আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি আগরতলা শহরকে সৌন্দর্যায়ন ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উপরও মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন।
সভায় শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব অভিষেক চন্দ্রা জি-২০ সম্মেলনের প্রস্তুতি বিষয়ে জানান, হাঁপানীয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইন্ডোর প্রদর্শনী হলে জি-২০ বিজ্ঞান সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হবে। সেই লক্ষ্যে ইন্ডোর প্রদর্শনী হলটিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।এই সম্মেলনের থিম হচ্ছে 'ক্লিন এনার্জি ফর এ গ্রীনার ফিউচার'। তিনি জানান, জি-২০-র প্রতিনিধিগণ ২ এপ্রিল, ২০ দুপুরে রাজ্যে এসে পৌঁছবেন। এদিন বিকালে প্রতিনিধিগণ লিচুবাগানস্থিত এলবার্ট এক্কা পার্ক এবং কুমারীটিলা মিউজিক্যাল ফাউন্টেনটি পরিদর্শন করতে যাবেন। ৩ এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৯ টায় আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইন্ডোর প্রদর্শনী হলে সম্মেলনের প্রথম সেশন সায়েন্স-২০' সভা শুরু হবে। দ্বিতীয় সেশনে থাকবে প্রদর্শনী স্টলের উদ্বোধন, সাংবাদিক সম্মেলন এবং ইনভেস্টর মিট। ঐদিন সন্ধ্যায় উজ্জয়ন্ত প্রাসাদে লাইট এন্ড সাউন্ড এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সচিব অভিষেক চন্দ্রা জানান, ৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬ টায় অক্সিজেন পার্কে যোগা সেশনের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে জি-২০ দেশের প্রতিনিধিগণ যোগায় অংশগ্রহণ করবেন। সে লক্ষ্যে যোগা প্রশিক্ষক এবং ঘোষকদের ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অক্সিজেন পার্কের সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে এবং জি-২০ দেশের প্রতিনিধিদের দ্বারা বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে। সচিব জানান, ৪ এপ্রিল, জি-২০ দেশের প্রতিনিধিগণ পূর্বাশা, সিপাহিজলা অভয়ারণ্য এবং নীরমহল পরিদর্শনে যাবেন। সেইলক্ষ্যে ঐ স্থানগুলির সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ দ্রুত গতিতে
চলছে। সভায় শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব জানান, জি-২০ দেশের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানাতে মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দরকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে হোটেল পোলো টাওয়ার পর্যন্ত রাস্তার দু'পাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং আলোকসজ্জা করা হচ্ছে। এছাড়াও শহরের সৌন্দার্য্যয়নের লক্ষ্যে ওয়াল পেইন্টিং সহ বিভিন্ন স্মৃতিসৌধকে রঙিন ও আলোকমালায় সজ্জিত করা হচ্ছে।
সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস জানান, জি-২০ দেশের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানাতে বিমানবন্দর থেকে হোটেল পোলো টাওয়ার পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার শিল্পীগণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন। ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় উজ্জয়ন্ত প্রাসাদে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যের জাতি-জনজাতির মিশ্র সংস্কৃতিকে অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হবে। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি রাজ্যবাসী উপভোগ করার লক্ষ্যে দপ্তরের ফেসবুক লাইভ সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে লাগানো দপ্তরের এলইডি স্ক্রীনের মাধ্যমেও সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও দপ্তরের মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন স্থানে জি-২০ সম্মেলন সম্বলিত বিষয়ে ফ্ল্যাক্সও লাগানো হবে।
পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়, পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা রাজস্ব দপ্তরের প্রধান আগরওয়াল তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষ শেঠী, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন সহ বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগন ছিলেন এবং আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন।