'কের পুজো' কথাটির সাথে আমরা সকলেই সুপরিচিত। ত্রিপুরা রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী পুজো গুলির মধ্যে অন্যতম একটি পুজো হল 'কের পুজো'। প্রত্যেক বছর চিরাচরিত রীতি মেনে এই পুজো করা হয়। ত্রিপুরার আদি জনজাতির মানুষ যুগ-যুগ ধরে এই 'কের পুজো' করে আসছে।
মূলত রোগব্যাধি দূর করার উদ্দেশ্যে প্রাচীনকাল থেকে এই পুজো প্রচলিত। চতুর্দশ দেবতা মন্দিরের বাৎসরিক খার্চী উৎসব সমাপ্তির এক সপ্তাহ পর 'কের পুজো' হয়ে থাকে। অন্যান্য বছর উজয়ন্ত প্রাসাদে যথাযত রীতি মেনে হয় "কের পুজো "। কের পুজোর পুরোহিত কে বলা হয় "চন্তাই"। পুজো শুরুর আগে 'চন্তাই' পুজো এলাকায় গন্ডি একে দেওয়ার পর "তপোধ্বনির" মধ্য দিয়ে পুজো শুরু হয়। এই গন্ডির মধ্যে যারা প্রবেশ করেন তাঁরা দুদিন কের পুজো শেষ না হওয়া পর্যন্ত বের হতে পারেন না। আগে পুজোর গন্ডি বিশাল এলাকা জুড়ে করা হলেও এখন তার পরিসর ছোট করে পুজোর চারপাশে সামান্য জায়গা জুড়ে নির্দিষ্ট গন্ডি একে দেওয়া হয়। কথিত আছে কেরের গন্ডিতে জন্ম নেই মৃত্যু ও নেই। তাই এই গন্ডির ভিতরে অতি বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মহিলাকে আসতে দেওয়া হয় না। এই পূজোর বেশ কিছু রীতিনীতি প্রচলিত রয়েছে। যেমন পুজোর আগের দিন এবং পুজোর দিন কোথাও কোনো বাড়িতে আগুন জ্বালানো হয়না। পুজোর আগুন জ্বালানো হয় শুকনো বাঁশের সঙ্গে বাঁশ ঘষে।এরপর সেই আগুন নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে বাড়িতে। আগে যদিও বা প্রায় সব বাড়িতেই পূজোর আগুন নিয়ে যাওয়ার রীতি ছিল। এখন সব বাড়িতে না হলেও আগরতলার বেশ কিছু বাড়িতে আগুন নিয়ে যাওয়ার রীতি রয়েছে।
সবশেষে বলা যায়- ত্রিপুরার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী উৎসব গুলি হল -খার্চী উৎসব,গড়িয়া উৎসব,বিজু উৎসব, তীর্থ মুখি উৎসব,অশোকষ্টমী উৎসব,গঙ্গা উৎসব, বাহ উৎসব ও কের উৎসব । এই কের উৎসব প্রতি বছর জুলাই মাসে আগরতলার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত উজয়ন্ত প্রাসাদে অনুষ্ঠিত হয়।
কলমে:- বিজেয়েতা চক্রবর্তী ভৌমিক
আর্টিকেল কর্নার: আপডেট ত্রিপুরা